সেলাই মেশিনে সংসারে বাড়তি আয়
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাটে হতদরিদ্র নারীদের জীবনমান উন্নয়নে প্রশিক্ষন প্রাপ্ত ২৭ নারীকে দেয়া হয় সেলাই মেশিন। আনুষ্ঠানিক ভাবে উপজেলা পরিষদ থেকে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীর আওতায় এ মেশিন গুলো বিতরন করা হয়। তবে সম্প্রতি উপজেলা নারী ভাইস চেয়ারম্যান শাহনাজ খাতুন অভিযোগ তুলেন, আনুষ্ঠানিকতা করা হলেও বিতরন করা হয়নি সেলাই মেশিন। এ নিয়ে তিনি এলজিইডি চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও বিভাগীয় কার্যালয়ে অভিযোগও জমা দেন।
তবে উপকারভোগী বেশ কয়েকজন জানিয়েছেন তারা উপজেলা পরিষদ থেকে সেলাই মেশিন পেয়েছেন। আর সেই সেলাই মেশিন চালিয়ে করছেন সংসারে বাড়তি আয়। উপজেলার বাহাদুরগঞ্জ গ্রামের মাসুদ রানার স্ত্রী মৌসুমী খাতুন জানান, তিনি উপজেলা পরিষদ থেকে সেলাই মেশিন পেয়েছেন। এরপর তিনি নিয়মিতই কাজ করছেন, কিছু আয়ও হচ্ছে তার।
সেলাই মেশিন বিতরনের কয়েকমাস পর, উপজেলা নারী ভাইস চেয়ারম্যানের বিভিন্ন দপ্তরে করা অভিযোগ নিয়ে বেশ বিব্রত উপজেলা চেয়ারম্যানসহ উপজেলার কর্মকর্তারা। উপজেলার এক দ্বায়িত্বশীল কর্মকর্তা অনেকটা বিরক্ত হয়েই বললেন, মেশিন বিতরনের এতো দিন পর, মেশিন না পাওয়ার অভিযোগ তোলা কতটা যোক্তিক। যারা বলছেন তারা মেশিন পাননি তারা কি ভিত্তিতে বলছেন। আসলে অনেকেরই নাম নেয়া হয়, এরপর ধারাবাহিকভাবে উপজেলা বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে নারীদের সেলাই মিশন সহ বিভিন্ন সহযোগিতা প্রদান করা হয়।
এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রাব্বুল হোসেন জানান, উপজেলা পরিষদে আনুষ্ঠানিক ভাবেই সেলাই মেশিন গুলো বিতরন করা হয়েছে। উপকার ভোগী নির্বাচনে সর্বচ্চো স্বচ্ছতাও নিশ্চিত করা হয়েছে। আর সবচেয়ে বড় বিষয় হলো এটি উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানই নিজে স্বমন্বয় করেছেন, তার মাধ্যমেই তো সেলাই মেশিনগুলো বিতরন করা হয়েছে। এতোদিন পর তিনি কেন এমন অভিযোগ তুলছেন আমার বোধগম্য হচ্ছে না।
এ বিষয়ে এলজিইডি ভোলাহাটের প্রকৌশলী আছহাবুর রহমান জানান উপজেলা চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে সেলাই মেশিন দেয়া হয়। এছাড়াও কিছু মেশিন উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নিজেই বিতরন করেছেন, সেই মেশিন বিতরনের ছবিও আছে। এখন তিনি কেন এসব অভিযোগ করছেন। যাদের দিয়ে অভিযোগ করা হয়েছে, তারা সবাই মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের আত্বীয় স্বজন ও পরিচিত জন।
তবে যার করা অভিযোগ নিয়ে এতো কথা, সেই মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহনাজ খাতুনকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহমিদা আক্তার জানান, আমি সম্প্রতি যোগদান করেছি, বিষয়টি আমি শুনেছি, খোঁজখবর করে দেখব। তবে এমন হওয়ার কথা নয়। কোন কিছু বিতরনের পর কেন ফেরত নেয়া হবে। তারপরও আমি বিষয়টি খতিয়ে দেখব।
এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোজাহার আলী প্রাং জানান, ভোলাহাটে সেলাই মেশিন বিতরনের বিষয় নিয়ে একটা অভিযোগ আমার দপ্তরে এসেছে। আমি উপজেলা প্রকৌশলীর সাথে কথা বলেছি, তিনি আমাকে জানিয়েছেন সেলাই মেশিন গুলো উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান সহ অনান্যদের উপস্থিতিতেই সুন্দরভাবেই বিতরন করা হয়েছে। এরপরও আমি সবকিছুই খোঁজ খবর করছি, তদন্ত শেষ হলে আপনাদেরও বিষয়টি জানাব।