শেষবার শিবগঞ্জ,রাজশাহী ঘুরে, শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে চিরনিন্দ্রায় এ্যাডভোকেট গোলাম আরিফ টিপু
স্মৃতিচারণকালে সবার কথায় উঠে আসে এ্যাডভোকেট গোলাম আরিফ টিপুর দেশপ্রেম, গ্রামের মানুষের প্রতি তার ভালোবাসা, মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ ও তার কর্মময় জীবনের সততার কথা

ভাষাসৈনিক,বীরমক্তিযোদ্ধা আন্তজার্তিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর এ্যাডভোকেট গোলাম আরিফ টিপুর দাফন সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার সকালে শিবগঞ্জে ও দুপুরে রাজশাহীতে নামাজের জানাযা শেষে ঢাকায় শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাহিত করা হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জের এ কৃতি সন্তানকে।

শনিবার সকাল পনে ৯টার দিকে ঢাকা থেকে গোলাম আরিফ টিপুর মরদেহবাহী এ্যাম্বুলেন্স তার পিতৃভিটা শিবগঞ্জে পৌচ্ছায়। ৯টার দিকে রানীহাটি বাজার ঈদ গাঁহে জানাযার পূর্বে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের এ কৃতি সন্তানের প্রতি শ্রদ্ধা জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খাঁন ও পুলিশ সুপার ছাইদুল হাসান। এসময় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ভাষা সৈনিক এ্যাডভোকেট গোলাম আরিফ টিপুকে রাষ্টীয় সন্মান জানানো হয়।
শেষ বারের মত গুনী এ মানুষটিকে বিদায় জানাতে উপস্থিত ছিলেন বিচারপ্রতি এমদাদুল হক, এ্যাডভোকেট গোলাম আরিফ টিপুর ছোট মেয়ে ডানা নাজলী, জামাতা সাহিনুর রহমানসহ চাঁপাইনবাবগঞ্জের রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ অনেকেই।
স্মৃতিচারণকালে সবার কথায় উঠে আসে এ্যাডভোকেট গোলাম আরিফ টিপুর দেশপ্রেম, গ্রামের মানুষের প্রতি তার ভালোবাসা, মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ ও তার কর্মময় জীবনের সততার কথা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে জানাযা ও শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এ্যাডভোকেট গোলাম আরিফ টিপুর মরদেহ নেয়া হয়, রাজশাহীতে। সেখানে রাজশাহী কলেজে শ্রদ্ধা নিবেদন ও জানাযা শেষে ঢাকায় নেয়ার পর শহিদ বুদ্ধিজীবি কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
এ্যাডভোকেট গোলাম আরিফ টিপু ১৯৩১ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার কমলাকান্তপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি রাজশাহীতে ভাষা আন্দোলনে মূখ্য ভূমিকা পালন করেন । রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের রাজশাহী অঞ্চলের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। ভাষা আন্দোলনে বিশেষ অবদানের জন্য ২০১৯ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে একুশে পদক প্রদান করে। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও রাজশাহী আইনজীবী সমিতির সভাপতি, এবং বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সংগঠিত মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িতদের বিচারের উদ্দেশ্যে ২০১০ সালে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন তিনি।
তিনি দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন । শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৯৩ বছর।