ক্যান্সারে আক্রান্ত ছোট্ট শামিয়া , ব্যায়বহুল চিকিৎসায় অসহায়ত্ব
অংকুরেই কি নিভে যাবে স্বপ্ন
ছোট্ট সামিয়া, দূরন্ত শৈশবের এ সময়ে তার ঠায় হয়েছে হাসপাতালের বিছানায়। বোন কান্সারে আক্রান্ত হয়ে ভারতে চিকিৎসাধীন শামীমা নবাবগঞ্জ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেনীর শিক্ষার্থী। চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের বেলেপুকুর এলাকার তোফিকুল ইসলাম ও মাতা সেলিনা বেগমের ছোট সন্তান শামীমা আক্তার। মেধাবী শামিমা প্রাথমিকের গন্ডি পেরিয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেনীতে এ বছরই ভর্তি হয়েছে। মেয়েকে নিয়ে মায়ের স্বপ্নে আকাশে হঠাৎ করেই যেন ক্যান্সারের কালো মেঘ। মেয়ের ব্যায়বহুল চিকিৎসা ব্যায় সামলাতে রীতিমত হিমসিম অবস্থা শামীমার মা সেলিনা বেগমের। তবে অংকুরেই নিভে যাবে মা-মেয়ের হাজারো স্বপ্ন।
পঞ্চম শ্রেনীতে থাকা অবস্থাতেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলো শামীমা। চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহীতে চিকিৎসায় সুস্থ হয় সে। পরে আবারো এ বছরের শুরুতে আবারো অসুস্থ হয়ে পড়লে, চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়া হয়। সেখানে ধরা পড়ে বোন ক্যান্সারে আক্রান্ত শামীমা। দুই মেয়েকে নিয়ে একাই সংসার চালানো সেলিনা বেগমের যেন শুরু হয় আরেক সংগ্রাম। নিজের গয়নাসহ সব সঞ্চয় এক করে, মেয়ের চিকিৎসার জন্য যান ভারতে। গত ৭ মার্চ থেকে ভারতেই চলছে শামীমার চিকিৎসা।
শামিয়ার বড় বোন নবাবগঞ্জ সরকারী কলেজের ছাত্রী আজিজা খাতুন জানান, তার বোনের দীর্ঘ মেয়াদী চিকিসার প্রয়োজন পড়বে। চিকিৎসকরা জানিয়েছে প্রায় ৮ মাস হাসপাতালে থাকার প্রয়োজন পড়তে পারে। এতে প্রায় ২০-২৫ লাখ টাকা প্রয়োজন পড়তে পারে বলে চিকিৎসকরা ধারনা দিয়েছেন। এ চিকিৎসা খরচ চালানো আমাদের পক্ষে অসম্ভব। তাহলে কি অর্থের অভাবে আমার বোনের চিকিৎসা হবে না। বলেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
শামীমার শিক্ষক ফজলুর রহমান জানান, ৬ষ্ঠ শ্রেনীতে ভর্তি হওয়ার কিছুদিন পর থেকেই জানা যায় শামিমা বোন ক্যান্সারে আক্রান্ত। এর চিকিৎসা ব্যায় নিবাহ করা পরিবারটির পক্ষে অনেকটায় অসম্ভব। আমরা বিদ্যালয় থেকে কিছুটা সহায়তা দিয়েছি, তবে সেটা সামান্যই। এসময় পরিবারটির পাশে সবাই এগিয়ে আসলে তারা একটুকু হলেও মানসিক সাহস পাবে।
বেলেপুকুর মহল্লার আপেল মাহমুদ নামে একজন জানান, দুই মেয়েকে নিয়েই সংসারটা চালাতেন শামীমার মা। এখন শামীমার চিকিৎসার খরচ জোগাড় করতে পরিবারটি অসহাত্বের মধ্যে পড়েছেন। আমরা সবাই যদি ১০০ টাকা করেও দেয় তাহলে চিকিৎসার জন্য যে খরচ তা উঠতে খুব বেশি সময় লাগবে না। সবার সামান্য অংশ গ্রহণে বেঁচে যেতে পারে, একজন মায়ের সন্তান। অংকুরেই নিভে যাবে না মা-মেয়ের স্বপ্নটাও।